আজো নাকি সেই বাঁশীর রাজাটি তমাল-লতার ফাঁদে, চরণ জড়ায়ে নূপুর হারায়ে পথের ধূলায় কাঁদে তোমাদের প্রেম নিকষিত হেম কামনা নাহিক তায় যুগে যুগে কবি গড়িয়াছে ছবি কত ব্রজের গাঁয়! আজো কানে গোঁজ শিরীষ কুসুম কিংশুক-মঞ্জরী, অলকে বাঁধিয়া পাটল ফুলেতে ভরে লও উত্তরী! রঙের কুহেলী তলে, তোমার জীবন ঊষার আকাশে শিশু রবি সম জ্বলে। ওপারে কিশোর, এপারে যুবক, রাজার দেউল বাড়ি, পাষাণের দেশে কেন এলে ভাই। রাখালের দেশ ছাড়ি?

আজো নাকি সেই বাঁশীর রাজাটি তমাল-লতার ফাঁদে, চরণ জড়ায়ে নূপুর হারায়ে পথের ধূলায় কাঁদে আজো নাকি সেই বাঁশীর রাজাটি তমাল-লতার ফাঁদে, চরণ জড়ায়ে নূপুর হারায়ে পথের ধূলায় কাঁদে এখন হইবে লোক জানাজানি, মুখ চেনাচেনি আর, হিসাব নিকাশ হইবে এখন কতটুকু আছে কার। হয়ত তাহারি অলকে বাঁধিতে মাঠের কুসুম ফুল, কতদূর পথ ঘুরিয়া মরিছ কত পথ করি ভুল। সেথায় তোমার কিশোরী বধূটি মাটির প্রদীপ ধরি, তুলসীর মূলে প্রণাম যে আঁকে হয়ত তোমারে স্মরি।

শূন্য হাওয়ার শূন্য ভরিতে বুকখানি করি শুনো, ফুলের দেউল হবে না উজাড় আজিকে প্রভাতে পুন। ওপারে কিশোর, এপারে যুবক, রাজার দেউল বাড়ি, পাষাণের দেশে কেন এলে ভাই। রাখালের দেশ ছাড়ি? হয়ত তাহাও জানে না সে মেয়ে জানে না কুসুম-হার, এত যে আদরে গাঁথিছে সে তাহা গলায় দোলাবে কার? আজিও নিজেরে বিকাইতে পার ফুলের মালার দামে, রূপকথা শুনি তোমাদের দেশে রূপকথা-দেয়া নামে। আজো কানে গোঁজ শিরীষ কুসুম কিংশুক-মঞ্জরী, অলকে বাঁধিয়া পাটল ফুলেতে ভরে লও উত্তরী!

তরুণ কিশোর! তোমার জীবনে সবে এ ভোরের বেলা, ভোরের বাতাস ভোরের কুসুমে জুড়েছে রঙের খেলা। হয়ত তাহাও জানে না সে মেয়ে জানে না কুসুম-হার, এত যে আদরে গাঁথিছে সে তাহা গলায় দোলাবে কার? হয়ত তাহাও জানে না সে মেয়ে জানে না কুসুম-হার, এত যে আদরে গাঁথিছে সে তাহা গলায় দোলাবে কার? বঁধুর কোলেতে বধুয়া ঘুমায়, খোলেনি বাহুর বাঁধ, দীঘির জলেতে নাহিয়া নাহিয়া মেটেনি তারার সাধ। এখনো গোপন আঁধারের তলে আলোকের শতদল, মেঘে মেঘে লেগে বরণে বরণে করিতেছে টলমল।

হেথা যৌবন মেলিয়া ধরিয়া জমা-খরচের খাতা, লাভ লেকাসান নিতেছে বুঝিয়া খুলিয়া পাতায় পাতা। এখনো পাখিরা উঠেনি জাগিয়া, শিশির রয়েছে ঘুমে, কলঙ্কী চাঁদ পশ্চিমে হেলি কৌমুদী-লতা চুমে। তুমিও হয়ত জান না কিশোর, সেই কিশোরীর লাগি, মনে মনে কত দেউল গেঁথেছে কত না রজনী জাগি। হেথা যৌবন যত কিছু এর খাতায় লিখিয়া লয়, পান হতে চুন খসেনাক-এমনি হিসাবময়। সেথায় তোমার কিশোরী বধূটি মাটির প্রদীপ ধরি, তুলসীর মূলে প্রণাম যে আঁকে হয়ত তোমারে স্মরি।